Posts

Showing posts from May, 2025

ফ্যাসিবাদের পতন যেভাবে বিপ্লবে পরিণত হতে ব্যর্থ হয়

ফ্যাসিবাদের পতনের প্রক্রিয়া, জনগণের ত্যাগ, পুরো ঘটনাপ্রবাহের প্রেক্ষাপট কোনো কবিতার ছন্দ অলংকারের মাধুর্যের মতন সুন্দর নয়। ক্ষমতাধর শক্তির বিরুদ্ধে একটা শব্দ উচ্চারণের জন্যও যখন প্রাণ হারাতে হয় তখন তার পতনের জন্য সংগ্রাম করে যাওয়া আর কুমিরের সাথে সাঁতার কাটা একই অর্থ বহন করে। তারপরেও ফ্যাসিবাদের পতন হয়, ধুমড়ে মুচড়ে যায় অহংকারের অট্টলিকা, ক্ষমতার পর্বত আর বিশাল জলরাশির মতন বিস্তৃত প্রভাব-প্রতিপত্তি। কিন্তু তার জন্য যতগুলো ত্যাগের গল্প তৈরী হয় ততগুলো গল্পও গল্পকারের এপর্যন্ত লিখতে উঠতে পারেনি। সীমাহীন কষ্ট আর অশ্রু ঝরা গল্পে গল্পে, গল্পের স্তুপ হয়ে যায় আর সেই গল্পের স্তুপের উপর দাঁড়িয়ে যার নতুন এক শক্তি। যারা মূলত ক্ষমতাশীলদের ধ্বংস করে নিজেরা ক্ষমতায় আসীন হয়ে থাকে কিন্তু ক্ষণে ক্ষণে এতো আত্মত্যাগের পরিণতি রং বদলায়।  যেখানে ক্ষমতাসীনদের ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। সেখানে সাময়িক সুখের লোভে নির্লোভ বিপ্লবীরা ভিক্ষুকে পরিণত হয়। যেখানে ফ্যাসিবাদীর বয়ানকে কবর দেয়ার কথা সেখানে বীরেরা চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করে নিজেরাই কবরে চলে যায়। আর লুকিয়ে থাকা ফ্যাসিবাদী শক্তি একটু একটু  ক...

বিজয়ীদের দলে থেকেও বিজয়ের ইতিহাস থেকে বঞ্চিত

কোনো সংগ্রাম, আন্দোলন কিংবা বিপ্লবে একক শক্তি, একক দল, একক আদর্শ একা কিছু করতে পারে না। সম্মিলিত শক্তি, বহুদলের আওয়াজ লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করে। কিন্তু লক্ষ্যে পৌঁছানোর পর, চূড়ান্ত বিজয় আসার পর কিছু মানুষের হয় ভীমরতি। আন্দোলনের আদর্শ থেকে হয় বিচ্যুতি, সহযোদ্ধাদের সাথে সম্পর্কের অবনতি। ফলাফল বিচ্ছেদ। ফলাফল বিজয়ীদের লেখা ইতিহাসের সঙ্গী হওয়া যায় না। বিজয়ের ইতিহাসের পাতা থেকে আড়াল করার চেষ্টা করা হয়। সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া সহযোদ্ধাদের অস্বীকারই করে বসে আবার কেউ কেউ। তাই বিজয়ের পর শুধু পরাজিতদের বীরত্বই হারিয়ে যায় না বরং হাতে হাত রেখে বিজয় অর্জনের কারিগরদেরও বিজয়ের অর্জন বঞ্চিত হতে হয়। 

বেরসিক বিপ্লবে বঞ্চিত বীরেরা

মানুষ সাধারণত একটি কাজ করতে যেখানে তার প্রয়োজন আছে, অবশ্যকতা আছে কিংবা অন্য পন্থা নেই। সব মানুষ কখনোই ভালো লাগা থেকে সব কাজ করে না, কিছু মানুষ অনিচ্ছা সত্বেও অর্থ, সম্পদ, ক্ষমতার জন্য কাজ করে কিছু মানুষ আবার কাজটি না করলে যে সমূহ বিপদ তা থেকে মুক্ত হতে কাজ তা করে। বিপ্লবের সময় যারা মাঠে নাম তাদের সবার কিন্তু উক্ত কোনো কারণ থাকে না।  বর্তমান কাঠামোতে অনেকেই দিব্যি চলতে পারতো। কিন্তু তবু মানুষের বিবেকে আটকায় কিছু পাওয়া, ভালো লাগা কিংবা শোষণের হাত থেকে বাঁচতে নয়। হয়তো নতুন কিছুর আশায়ও মানুষ বিপ্লবে নেমে পরে। কিন্তু বিপ্লব শেষ হওয়ার পরেই বিপ্লবের মহান কারিগররা বেবরসিকভাবে বিপ্লব সফল করার নেপথ্যে থাকা সাধারণ মানুষকে ভুলে যায়। আরো একবার ধোঁকা খেয়ে বাঁকা হয়ে নিজের পথে চলতে থাকে আপন মনে। আর বিপ্লবের মহান কারিগররা বিত্ত বৈভব গড়ে থাকে যতক্ষণ না নতুন বিপ্লবের উত্থান ঘটে। বিপ্লবের পর বিপ্লব ঘটে কিন্তু বারবার আড়ালে পরে থাকে বিপ্লবের মূল বীরেরা। 

বিপ্লবের বিবর্ণতা

বিপ্লব কোনো স্বাভাবিক বিষয় নয়। বিপ্লব সমাজের চলমান, প্রতিষ্ঠিত কিংবা যৌক্তিক ব্যবস্থাকে মেনে চলে না। বিপ্লবের জন্য দরকার আত্মত্যাগ, অসীম সাহস আর বিশাল বিপদের হাতছানি। বিপ্লবে ব্যর্থ হওয়া আর বাঘের মুখে চলে যাওয়া প্রায় এক। কারণ বিপ্লবের ব্যর্থ বিপ্লবীর বেঁচে থাকা বা স্বাভাবিক জীবনযাপন অতীব দুর্লভ ব্যাপার। যদি না সে বিপ্লবের সাথে বেইমানি করে। কিন্তু বড়ই বিচিত্র বিষয় হচ্ছে সফল বিপ্লবের পর আনীত ব্যবস্থায় নতুন কোনো বিপ্লবের কুঁড়ি জন্মালে কিংবা নিজেদের মতের বিরুদ্ধে কোনো বিষয় আনীত হলে তখন তাকে তিরস্কার করার মতন উদ্ভট জিনিসের সম্মুখীন হতে হয়। ক্ষমতাসীন শক্তি তার প্রতিপক্ষকে দমন করে রাখার চেষ্টা করবে তা স্বাভাবিক। কিন্তু যেই নিয়মের বেড়াজাল ভেঙ্গে বিপ্লবের সৃষ্টি হলো সেই নিয়মের বেড়াজাল ভাঙলেই মায়াকান্না আর সুশীলতার প্রকাশ ঘটার মানে হচ্ছে নিজেদের বিপ্লবের সাথেই বেইমানি করা। 

দাঁতভাঙ্গা জবাব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনেক সময় বেশি কার্যকর

শান্তিপ্রিয়তা, ক্ষমা সুন্দর দৃষ্ট্রিতে দেখা, সহনশীলতাকে যেকোনো সমাজ, সভ্যতাতাই ভালোগুণ হিসেবে দেখা হয়। সমাজের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সকলের মধ্যে সহমর্মিতা এবং ভ্রাত্বিত্ব অক্ষুণ্ণ রাখতে এসব গুণের চর্চার অবকাশ নেই।  কিন্তু যখন প্রতিপক্ষ তুচ্ছ কারণে শুধু মাত্র এই ভেবে আক্রমণ করতে আসে  যে সে দুর্বল। তার বিরুদ্ধে বয়ান সৃষ্টি করে তাকে আক্রমণের যোক্তিকতা সৃষ্ট্রি করে তখন আর নমনীয়তা দেখানোর মহৎগুণ এই ক্ষেত্রে আর প্রযোজ্য হয় না।  বরং এই রকম অবস্থায় নমনীয়তা আক্রমণের শিকার পক্ষের জন্য তা ভয়ংকর বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই এমন পরিস্থিতিতে শত্রুর আঘাতের জবাব আরো শক্তিশালীভাবে দিতে হয় তাহলে অন্যায় করা শত্রু পক্ষ পিছিয়ে যায় এবং সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়। তাই সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সব সময় নমনীয়তা নয় অনেক সময় কঠোরতা অধিক কার্যকর।