জাতিকে দোষারোপ নয় বরং চাপিয়ে দেওয়া ব্যবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন
একটা কথা হরহামেশাই শোনা যায় আমরা জাতি হিসেবে খারাপ। এখানে ভালো কিছু করা দায়। পুরো জাতিই সু্যোগ সন্ধানী। যে জাতি ব্রিটিশ দ্বারা শাসনের আগে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি ছিলো সে জাতির অবনতির পিছনে শুধু জাতিকেই দোষ দেওয়া বেমানান (ভারত পৃথিবীর ২য় বৃহত্তম অর্থনীতি ছিলো, চীন ১ম। ভারতের বিশ্বের ২য় বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়ার পিছনে মূল কারণ ছিলো ভারতের অভ্যন্তরীণ সবচেয়ে বড় এবং বিশ্বের একক ৫ম বৃহত্তম অর্থনীতি বাঙ্গালাহ)। বাস্তবতা হলো এ জাতির চরম দুর্দশার পিছনে মূল কারণ হলো ব্রিটিশ, তাদের দোসর জমিদার এবং এখনো তাদের নীতি, নিয়ম কানুন, আদর্শ দিয়েই দেশ চলে। এখনো আমরা পাশ্চাত্যের ছাঁচে তাদের মতনই হতে চাই। অথচ কিছু ছোট ছোট পরিবর্তনই বিশাল বিশাল পরিবর্তন নিয়ে আসে। একটি উদাহারণ দিয়ে আমার কথার পক্ষে যুক্তি দেওয়া যাক। ঢাকা থেকে কোনো একস্থানের দূরত্ব ১৩০ কি.মি. আজ থেকে পাঁচ বছর আগে সাধারণত একটা সাধারণ মানুষের যেতে ৫-৬ ঘন্টাও সময় লেগে যেতো (ঈদের সময় ৮-১০ ঘন্টাও লাগতো) কিন্তু এখন ২.৫ ঘন্টায় আসা সম্ভব। প্রথমত কথা হচ্ছে মাত্র ১৩০ কি.মি. রাস্তা ৫-৬ ঘন্টা সময় লাগতো কেন? উত্তর হচ্ছে নিন্মমানের লোকাল সার্ভিস অর্থাৎ ১৩০ কিমির প্রায় বেশির ভাগ জায়গায় থামা, দুটি স্থানে ১৫-২০ মিনিট করে স্টপেজ (পরবর্তী বাস না আসা পর্যন্ত আগের বাস দাঁড়ায়া থাকবে), দাঁড়ায়া যাত্রী তোলা, ভাড়া নিয়ে তর্কাতর্কি, ২ লেনের মহাসড়ক। এই ১৩০ কিমি পথের যাত্রা এক বিভীষিকার নাম ছিলো। অথচ এখন মোটা দাগে দুটি পরিবর্তন এসেছে মহাসড়কটি চারলেনে পরিবর্তন এবং টিকেট কাউন্টারের প্রবর্তন যার ফলে বিরামহীন যাত্রা, নেই দাঁড়িয়ে যাত্রী বা অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে তর্কাতর্কি নেই বাস যাত্রা নিয়ে আতংক। মাত্র দুটি সিস্টেমের পরিবর্তন অনেকগুলো সমস্যার সমাধান করে দিয়েছে। অথচ বাসের নৈরাজ্যের দিনগুলোয়, পরিবহন শ্রমিকদের দুর্ব্যবহার, যাত্রীদের ঝগড়াঝাটি, এতো অনিয়মে মনে হতো দেশের জনগণই খারাপ। কিন্তু সিস্টেমের পরিবর্তনে একই যাত্রী একই পরিবহন শ্রমিকদের নিয়ে একই রাস্তায় সুন্দর সার্ভিস দিচ্ছে। তাই জনগণ নয় সিস্টেমের দিকে আঙুল তুলুন।
Comments
Post a Comment